পুতিন: ইউক্রেন আক্রমণে আরও আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল
- By Jamini Roy --
- 20 December, 2024
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় ছাড়াও ইউক্রেন যুদ্ধ ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, রুশ সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিদিনই সফলতার সঙ্গে তাদের লক্ষ্য অর্জন করছে। গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসছে বলেও জানান তিনি।
পুতিন আরও বলেন, ইউক্রেন আক্রমণে আরও আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। তার মতে, ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাত এড়ানোর কোনো উপায় ছিল না, কারণ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে ঘিরে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছিল।
যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন বলেও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট। বেশ কয়েক বছর ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা থেকে বিরত থাকলেও, ট্রাম্প প্রশাসনে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা গেলে তিনি সেই পথে হাঁটবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পুতিন মনে করেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি বদলাতে পারে। আলোচনার মধ্য দিয়ে চলমান সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। রাশিয়ায় তৈরি ‘ওরেশনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর ভুল ধারণা দূর করতেই তিনি এ প্রস্তাব দেন।
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন। তিনি কুরস্ক অঞ্চলে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের উল্লেখ করে বলেন, “ইউক্রেনীয় সেনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আমরা এই সন্ত্রাস দমন করব।”
পুতিন উল্লেখ করেন যে মঙ্গলবার রাশিয়ার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিরিলোভকে তার বাসভবনের সামনে গুলি করে হত্যা করেছে ইউক্রেনীয়রা। এই হত্যাকাণ্ডকে তিনি ইউক্রেনের “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের” একটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
কুরস্ক সম্মুখ যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবরও উঠে এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এক আইনপ্রণেতার দাবি অনুযায়ী, সংঘর্ষে উত্তর কোরিয়ার শতাধিক সেনা নিহত এবং প্রায় এক হাজার সেনা আহত হয়েছে। উত্তর কোরিয়া যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করছে এমন খবর পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যেও আলোড়ন তুলেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা কমানোর জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগ চলছে। তবে পুতিনের বক্তব্য ও সামরিক শক্তি প্রদর্শনের আহ্বান সংকট আরও জটিল করে তুলতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হলেও, এই আলোচনা বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।